ভালো ঘুমের জন্য 'মেলাটোনিন হরমোন' কিভাবে বাড়ানো যায়?

 

সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঘুম হেলদি ফুড এক্সারসাইজ এই তিনটি জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন আমাদের অনেকেই রাত জেগে সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করা, মুভি দেখা আর দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার রীতিমতো যেন হেবিট হয়ে গেছে লাইফ স্টাইলের কারণে স্লিপ প্যাটার্নে প্রভাব পড়েছে।

 ঠিকমতো ঘুম হলে শরীর, মন দুটোই ভালো থাকে।আমাদের স্লিপ সাইকেল বা ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে এমন একটি হরমোন যার নাম মেলাটোনিন। ভালো ঘুমের জন্য এই হরমোনের পরিমাণ কিভাবে বাড়াবো চলুন জেনে নেই।

পেজ সূচিপত্র ঃ ভালো ঘুমের জন্য মেলাটোনিন হরমোন যেভাবে বাড়ানো যায়


মেলাটোনিন আসলে কি?

মেলাটনিন হরমোন পেনিয়ার গ্ল্যান্ডে তৈরি হয় যা শরীরের circadian rhythms বা আমাদের জেগে থাকা বা ঘুমানোর যে ন্যাচারাল বায়োলজিক্যাল সিস্টেম সেটা নিয়ন্ত্রণ করে। দিনের বেলা পেনিয়ার গ্ল্যান্ড সক্রিয় থাকে না। যখন অন্ধকার হয়, তখন শরীরে মেলাটোনিন বৃদ্ধি পায়। আলোতে মেলাডোনিন কমে যায় এবং আমরা জেগে যাই। আলোতে মেলাটোনিন কাজ করে না, তাই আমরা ঘুম থেকে জেগে যাই।

মেলাটোনিন কেন প্রয়োজন?

পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের শরীরকে ন্যাচারালি হিলিং ও রিপেয়ার করে। সাধারণত ঘুমের সময় নিউরোট্রান্সমিটার ও হরমোন নিঃসৃত হয়, যা সারা দিনের জন্য শরীরকে সতেজ রাখে। যখন আমরা ডিপ ক্লিন নেই, আমাদের বডি রিস্টোরিটিভ ফাংশনে যেমন- টিস্যু রিপেয়ার, ইমিউনিটি সিস্টেম সাপোর্ট কাজ করে।, কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে, মেলা টোনিনের এন্টি ইনফ্লামেটরি প্রপার্টিজ আছে যা হিলিং বা রিকভারে প্রসেসে ভূমিকা রাখে। এটি কিন্তু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই বুঝতেই পারছেন এই হরমোন কতটা জরুরী। এর জন্য ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল একটি বিষয় যা আমাদের নিয়ম করে মেনে চলতে হবে।

সানলাইট কি মেলাটোনিন প্রোডাকশনের ভূমিকা রাখে?

হ্যাঁ চোখে কিছু লাইট সেনসিটিভ সেলস থাকে, যা ফটো রেসিপ্টর নামে পরিচিত। যখন চোখ আলো সনাক্ত করে বিশেষ করে নীল বা স্বল্প- তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো, তখন মেলাটোনিন প্রোডাকশন কমে যায়। আবার সন্ধ্যার পর এডি স্বাভাবিক নিয়মেই বাড়ে। তাই রাত হলে ঘুম আসে আর সকালে ন্যাচারাল লাইটে এক্সপোজার বডিকে সিগন্যাল দেই যে এখন উঠতে হবে।

ভালো ঘুমের জন্য এই হরমোন কিভাবে বাড়ানো যায়?

ঘুমের একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলার মাধ্যমে ম্যারাডোনিন প্রাকৃতিক উপায়ে বৃদ্ধি করা যায়। ডিম, দুধ, মাছ, কলা,বাদাম, মাশরুম, আখরোট এগুলো মেলাটোনিন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ভালো ঘুমের জন্য দুশ্চিন্তা না করা, স্ক্রীন টাইম লিমিটেড রাখা। এগুলো আপনাকে সাহায্য করবে ঘুমের বায়োলজিকাল সিস্টেম ঠিক রাখতে। ভালো ঘুমের জন্য এই মেলাটোনিন হরমোন কিভাবে বাড়ানো যায় সেই দিক অবশ্যই ভালো ভাবে খেয়াল রাখতে হবে।

খেয়াল রাখুন কিছু বিষয়

১। সুগারী ফুড আইটেমস, অ্যালকোহ্‌ল, ক্যাফেইন, স্পাইসি ফুড ও হেভি মিল কিন্তু এই ঘুমের হরমোনের কার্যক্রম কে ব্যাহত করতে পারে। স্লিপ প্যাটার্ন আর ন্যাচারাল বডি ফাংশন ঠিক রাখতে অবশ্যই রাত আটটার মধ্যে ডিনার করে নিন। বেড টাইমের আগে হাই ক্যালোরি ইনটেক থেকে বিরত থাকুন।
২। ব্রেকফাস্ট এর টাইম একেকজনের লাইফস্টাইল সিডিউল, প্রেফারেন্স এগুলোর ওপর মূলত নির্ভর করে। কিন্তু ফিট থাকতে ঘুম থেকে ওঠার এক দুই ঘন্টা পর ব্রেকফাস্ট করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

পরিশেষে মেলাটোনিন হরমোন যেভাবে বাড়ানো যায়ঃ


সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঘুমের প্রয়োজনীয়তা নতুন করে কিছু বলার নেই। পার্টি হলে গ্লুকোজের বিপাক বাধাগ্রস্থ হয়। স্ট্রেস হরমোন বৃদ্ধি পায়, ফোকাস কমে যায়। ঘুম ভালো হলে মনটাও ভালো থাকে। তাই ঠিকমত ঘুমের প্রতি আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া ও ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘুমের জন্য কোন মেডিসিন গ্রহণ করবেন না, কারণ এর সাইট ইফেক্ট থাকে। তাই ন্যাচারাল ওয়ে তে কিভাবে এই হরমোন বাড়ানো যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। সুস্থ থাকুন, আনন্দে বাঁচুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url